‘পুলিশ কোন দলের না হোক’

সোসাল মিডিয়া, 26 September 2025, 55 বার পড়া হয়েছে,

ক্রইম সন্ধান ডেস্ক

মো. নাজমুল ইসলাম। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপির) সদ্য বরখাস্ত এক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (ডিসি)। জুলাই অভ্যুত্থান সংক্রান্ত দুটি মামলার আসামি তিনি।

শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ফেসবুকে নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্ট করেছেন সাবেক এ অতিরিক্ত ডিসি; যেখানে তিনি বলেছেন, ‘পুলিশ কোন দলের না হোক, পুলিশ হোক গণমানুষের’।

পাঠকদের জন্য তার স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো:

যেখানে পুরো বিশ্ব আরেকটি বিশ্বযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে ও স্বদেশ নানা সংকটে পুড়ছে সেখানে আমার এই পোস্ট খুবই স্বার্থপর ঘরানার, তদুপরি না লিখে পারছি না। ক্ষমা করবেন আপনাদের কষ্টের সময় নিচ্ছি।

বাংলাদেশের সাইবার অপরাধ দমনের পথিকৃৎ হিসেবে ডিএমপি এর সাইবার ইউনিট ২০১৪ সালে কাজ শুরু করে এবং আমি উক্ত ইউনিটের প্রথম সহকারি পুলিশ কমিশনার হিসেবে কাজ শুরু করি। দেশ-বিদেশে অবস্থানরত কমপক্ষে ছয় হাজার সাইবার অপরাধের শিকার ভিক্টিমকে আমরা (টিম সাইবার) সেবা প্রদান করেছি। সাইবার জগতের নানা চাঞ্চল্যকর ঘটনার তদন্ত করে দেশকে সাইবার রিজিলিয়েন্ট করার প্রচেষ্টায় নিয়োজিত ছিলাম। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ হ্যাক, ক্রেডিট কার্ড বা অনলাইন ব্যাংকিং জালিয়াতি, মোবাইল ব্যাংকিং ফ্রড, সাইবার পর্ণগ্রাফি, অনলাইন বুলিং বা হ্যারাজমেন্ট, ইলেক্ট্রনিক ফ্রড, হ্যাকিং, স্টকিং ও রুপপুর পারমাণবিক স্থাপনা সহ দেশে সাইবার ক্রিটিকাল ইনফ্র্যাস্ট্রাকচার গুলোর সাইবার নিরাপত্তা ও ইত্যাদি প্রাযুক্তিক অপরাধ নিয়ে আমরা গত দশ বছরেরও অধিক সময় দেশের ও দেশের  নাগরিকদের সেবা প্রদান করেছি যা সব মহলে  প্রশংসিত। আমি হলফ করে বলতে পারবো উপমহাদেশের যে কোন এজেন্সির তুলনায় আমরা পারঙ্গম ও সক্ষম।

পুলিশে ভাল পোস্টিং বলতে যা বোঝায় মানে জেলা, ডিভিশন, জোন ইত্যাদিতে পদায়ন হলো না, আমি চাইও নাই। কোন কপালে প্রাযুক্তিক অপরাধ তদন্ত শিখেছিলাম, বিধি বাম সেখানেই (সাইবার) পদায়ন হলো ও মনপ্রাণ দিয়ে কাজ করলাম। কোনদিন দাঙ্গা পুলিশ বা মব নিয়ন্ত্রনে বাইরে কাজে যাইনি। তদুপরি ৫ আগস্টের পর দুটি হত্যা মামলার আসামি হলাম, হাস্যকর যে মামলার বাদী দুজনেই আমার পরিচিত (কাছের মানুষ মানে আমাদের সেবা নিয়েছে)। তারা জানেও না আমি এই লিস্ট এ কেন, কারা কেন এ লিস্ট করলো মাথায় আজো আসেনি!

নিজেকে পেশাদার পুলিশ অফিসার মনে করি, তাই আমার অফিসে আমি এবি পার্টি, বিএনপি, জামাত ই ইসলামি, জাতীয় পার্টি, বাম, আওয়ামী লীগ, হেফাজত ইত্যাদি যাই হোক না কেন দল মত নির্বিশেষে সবার জন্য সাইবার সেবা প্রদান করলাম ও জীবনে আবার পুলিশে কাজ করতে পারলে সবার জন্য সেবা উম্মুক্ত রাখবো বলে অঙ্গীকারাবদ্ধ।

কিন্তু, হুদা মিডিয়া ট্রায়াল এর শিকার হলাম-সত্য মিথ্যা জাজমেন্ট করার সুযোগ কই বা আমার আত্মপক্ষ সমর্থন মুলক বক্তব্য কই?? নিউজ চ্যানেলগুলো কারো এজেন্ডা বাস্তবায়নের পথে হাটলো! ৫ আগস্টের পর অনেক অপরাধী হয়ে গেল ভিক্টিম, অন্যকে পুলিশি সেবা দিতে গিয়ে আমি হলাম আসামি, আমার বিরুদ্ধে আদালতে আরও দুটি সিআর মামলা হলো যেখানে মামলার বাদী দুজনেই আমার কাছে অন্যের করা জিআর মামলায় আসামি, গ্রেফতারী পরোয়ানা দিলো অনুজ ঢাবি জ’হু হলের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সা******হ, আজো জানি না, অনুসন্ধান ছাড়াই কেন এ আজব পরোয়ানা! গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও মবোক্রেসির কারনে অফিস যাওয়া বন্ধ হলো, পুলিশের কেউ খোঁজ নিলো না, এতো অসহায় পুলিশ কখনো দেখিনি, একজন সারভিং অফিসার অন্যায় পরোয়ানার শিকার, কেউ কিছু বলে না, জব থেকে সাস্পেন্ডেড হলাম সেটা মানতে কষ্ট হলেও চেপে গেলাম, কারন অসহায় পুলিশ প্রশাসন।

হাজার সাইবার ভিক্টিমকে সেবা দিলাম; উপমহাদেশে তথা সারা বিশ্বে বা মহাবিশ্বে আমাদের মত সাইবার সেবা কোন ডিভিশন দেয়নি বা দিবেও না, কোনদিন দিতে পারবেও না। সেটা নগরবাসীকে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকার দিলে তারা বলবে। সেই সাইবার সেবা দিয়ে একটা পদক পেয়েছিলাম বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল-সেবা। কদিন আগে সেটা নাকি প্রত্যাহার করা হয়েছে। জব কেড়ে নিচ্ছেন নেন, পদক কেড়ে নিতে হবে এই বুদ্ধি তাদেরকে কে দিল, তাকে আমি পা ছুঁয়ে ছালাম করতে চাই; সারা দেশে এতো অবিচার অন্যায় হচ্ছে, সব কাজ বাদ দিয়ে পদক কেড়ে নেয়ার জন্য কাজে মন দিয়েছে তারা এটা ভাবতেই গা ঘিনঘিন করে।

এই নিউজ দেখে আমি মৃদু হেসেছি, আপনার কি মনে হয়? কোন কারটেসি ছাড়াই বলে দেন। আপনি খুশি হলে খুশি বলে দেন। অনেক গোলামী নিউজ এন্টিটি অপেক্ষা করছে আরেকবার এডিসি ওরফে ডিসি নাজমুলকে ধুয়ে দেয়ার জন্য, কারণ সবকিছু ছাপিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তিত্ব আমাকেই বানিয়েছে অনেকেই, আপনার মনে জমে থাকা হিংসা বা ক্ষোভের খোরাক না হয় আরেকবার হলাম।

পদক বাবদ পাওয়া টাকা না হয় ধারদেনা করে ফেরত দিতে পারবো, তবে ৫ আগস্ট অফিসে রাখা গাড়িতে আগুন দেওয়ায় সেখানে থাকা পুলিশ পোশাকের সাথে পদক পুড়ে গেছে, আমি এখন এই পদক ফেরত দেই কেমনে??? আহারে………

আমার এই লেখা কোন দল বা মতের পক্ষে বা বিপক্ষে না, শুধুই নিতান্ত ব্যক্তি নাজমুলের অনুভুতি মাত্র। পুলিশ কোন দলের না হোক, পুলিশ গণমানুষের হোক!!!

সময় সব কিছুর নিয়ন্ত্রক, সময় সব অজানা প্রশ্নের উত্তর দিবে। কিন্তু সবার আগে বাংলাদেশ ও দেশের মানুষ! বাংলাদেশ চিরজীবী হোক!!!

Hello world!

13 January 2025, 66268 বার পড়া হয়েছে,