পুরুষ ও মহিলার শারীরিক চাহিদার পার্থক্য

লাইফস্টাইল, 22 September 2025, 54 বার পড়া হয়েছে,

ক্রইম সন্ধান ডেস্ক

প্রকাশিত  : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ০২:১৯

 

পুরুষ কতদিন সহবাস ছাড়া থাকতে পারে?
আপনার স্বামী কি একটা টাইম বোম? যার ফিউজটা আপনার হাতে, কিন্তু যেকোনো মুহূর্তে ফেটে যেতে পারে? আপনি হয়তো ভাবছেন, “সে তো আমাকে ভালোবাসে, আমার জন্যই সব।” কিন্তু রাতের গভীরে যখন তার নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসে, তার হাত আপনার শরীর খোঁজে, তখন কি একবারও মনে প্রশ্ন জাগে না—এই যে তীব্র ক্ষুধা, এই যে শারীরিক চাহিদা, এটা কি কেবলই ভালোবাসা, নাকি এক আদিম আগুনের বিস্ফোরণ যা নিয়ন্ত্রণ করা প্রায় অসম্ভব?

রাস্তায় হেঁটে যাওয়া কোনো সুন্দরী নারীর দিকে তাকিয়ে আপনার স্বামীর চোখের মণিটা কি এক মুহূর্তের জন্য কেঁপে ওঠে? মোবাইলের স্ক্রিনে কোনো আবেদনময়ী শরীর দেখে তার আঙুলটা কি থমকে যায়? যদি যায়, তাহলে আতঙ্কিত হবেন না। বরং ভয়ংকর সত্যিটা জেনে নিন। একজন পুরুষকে যৌন উত্তেজিত করতে রকেট সায়েন্স লাগে না। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের একটা দৃশ্য, একটা কল্পনা, বা একটা পুরনো স্মৃতিই যথেষ্ট তার শরীরের ভেতর ঘুমিয়ে থাকা আগ্নেয়গিরিটাকে জাগিয়ে তোলার জন্য। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই সে শারীরিক মিলনের জন্য এমনভাবে প্রস্তুত হয়ে যেতে পারে, যেন এটাই তার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য।

অথচ আপনি? আপনার শরীর আর মন যেন এক জটিল সুরের যন্ত্র। ভালোবাসা, যত্ন, মানসিক শান্তি আর সঠিক পরিবেশ না পেলে আপনার ভেতরের সেই সুরটা বাজেই না। আপনার সময় লাগে, প্রস্তুতি লাগে। কিন্তু পুরুষের শরীর? সে যেন এক ক্ষুধার্ত বাঘ, শিকার দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়তে প্রস্তুত।

এই পার্থক্যটাই কি আপনাদের সম্পর্কের ভেতর লুকিয়ে থাকা সবচেয়ে বড় টাইম বোম?

বেশিরভাগ গবেষণাই বলছে, পুরুষের যৌন আকাঙ্ক্ষা ঘন ঘন আসে এবং ঝড়ের মতো তীব্র হয়। এর পেছনে কাজ করে টেস্টোস্টেরন নামক এক আগ্রাসী হরমোন। এই হরমোন তাকে শিকারি বানায়, বিজয়ী হতে শেখায়। অন্যদিকে, নারীর আকাঙ্ক্ষা চাঁদের মতো—কখনো বাড়ে, কখনো কমে। তার শরীর আর মন জুড়ে ইস্ট্রোজেন আর প্রোজেস্টেরনের মায়াবী খেলা। মাসিক চক্র, মানসিক চাপ, আর সম্পর্কের গভীরতা—এই সবকিছু মিলে তার ইচ্ছেরা ডানা মেলে।

তাহলে প্রশ্নটা হলো, যে পুরুষের শরীর প্রতি ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নতুন করে বীর্য তৈরি করে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়, সে কতদিন এই জৈবিক চাপ সহ্য করতে পারে?

মেডিকেল সায়েন্স বলছে, শরীর তার নিজের মুক্তির পথ সে নিজেই খুঁজে নেয়। যদি সেক্স বা হস্তমৈথুনের মাধ্যমে এই চাপ কমানো না হয়, তাহলে স্বপ্নদোষের মাধ্যমে শরীর প্রকৃতির নিয়মে নিজেকে হালকা করে। তার মানে, পুরুষের শরীর যৌনতাকে অস্বীকার করতে জানে না। সে হয়তো আপনার কাছে প্রকাশ করবে না, কিন্তু তার শরীর নিজের তাগিদেই নিজের কাজটা সেরে নেবে।

তাহলে কি পুরুষেরা একেবারেই সেক্স ছাড়া থাকতে পারে না?

যদি ভাবেন পুরুষ কেবলই তার শরীরের দাস, তাহলে আপনি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ভুলটা করছেন। যে পুরুষ আপনার শরীরের উত্তাপ ছাড়া দু’দিনও থাকতে পারে না বলে আপনার মনে হয়, সেই একই পুরুষ যখন আপনার আর আপনার সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য হাজার হাজার মাইল দূরে প্রবাসে পাড়ি দেয়, তখন সে কীভাবে বছরের পর বছর একা কাটায়?

তখন তার শরীরের সেই আগুনটা কোথায় যায়? সেই আগ্নেয়গিরিটা কি নিভে যায়?

না, নেভে না। বরং সেই পুরুষ তার ইচ্ছাশক্তি দিয়ে আগ্নেয়গিরির মুখে পাথর চাপা দিয়ে রাখে। তার শরীরের সমস্ত ক্ষুধা, সমস্ত কামনা আর উত্তেজনাকে সে তিলে তিলে দহন করে টাকায় পরিণত করে, যা সে আপনার জন্য পাঠায়। সে তখন আর শিকারি থাকে না, হয়ে ওঠে একজন যোদ্ধা। তার যুদ্ধটা হয় নিজের শরীরের বিরুদ্ধেই। প্রতি রাতে একাকী বিছানায় সে তার কামনাকে গলা টিপে হত্যা করে, শুধু আপনার মুখে হাসি ফোটাবে বলে।

আবার ভেবে দেখুন সেই সব পুরুষদের কথা, যারা ভালোবাসায় একবার ভয়ংকরভাবে প্রতারিত হয়ে সারা জীবনের জন্য নারীসঙ্গ ত্যাগ করে। বিয়ে না করে, কোনো সম্পর্কে না জড়িয়ে তারা কাটিয়ে দেয় গোটা জীবন। তাদের শরীরে কি টেস্টোস্টেরন তৈরি হয় না? তাদের কি ইচ্ছা জাগে না?

জাগে। কিন্তু প্রেমিকার দেওয়া ভয়ংকর এক ক্ষত তাদের ইচ্ছাশক্তিকে এতটাই ইস্পাত-কঠিন বানিয়ে দেয় যে, তারা সেই শারীরিক ক্ষুধাকে আমলেই নেয় না। তাদের কাছে ভালোবাসাটাই ছিল সবকিছু। সেটা যখন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়, তখন শরীরের চাহিদা তাদের কাছে তুচ্ছ মনে হয়।

তাহলে আসল সত্যটা কী? পুরুষ কি কামুক শিকারি নাকি মহৎ যোদ্ধা?

সত্যিটা হলো, পুরুষ দুটোই। সে একই দেহে একজন শিকারি এবং একজন রক্ষক। যখন সে আপনার কাছে থাকে, আপনার ভালোবাসা আর সান্নিধ্য পায়, তখন তার ভেতরের শিকারি সত্তাটা জেগে ওঠে। সে আপনাকে জয় করতে চায়, আপনার শরীরের প্রতিটি ভাঁজে নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এটা তার পৌরুষের প্রকাশ। সে চায় আপনি তার জন্য নিজেকে উজাড় করে দিন, তার বাহুতে নিজেকে সঁপে দিন।

কিন্তু যখন পরিস্থিতি তাকে যোদ্ধা হতে বাধ্য করে, তখন সে তার সমস্ত শিকারের ইচ্ছা বিসর্জন দিতে এক মুহূর্তও ভাবে না। তার কাছে তখন পরিবার, দায়িত্ব আর ভালোবাসাটাই মুখ্য হয়ে ওঠে। শরীরের চেয়েও বড় হয়ে যায় তার আত্মসম্মান আর আত্মত্যাগ।

নারীদের প্রতি শেষ কথা

আপনার স্বামী যখন দু’দিন পরপরই আপনাকে কাছে টানতে চায়, তখন তাকে শুধু একজন ‘কামুক’ বা ‘লুইচ্চা’ পুরুষ ভেবে ভুল করবেন না। ভেবে দেখুন, সে তার এই তীব্র ইচ্ছাকে শুধুমাত্র আপনার জন্যই বাঁচিয়ে রেখেছে। বাইরের হাজারো প্রলোভন তার জন্যও আছে। কিন্তু সে সবকিছু ছেড়ে আপনার কাছেই ফিরে আসে, কারণ আপনিই তার কেন্দ্র, তার একমাত্র শান্তির আশ্রয়।

তার এই তীব্রতাকে সম্মান করুন। তার শরীর যখন আপনাকে চায়, তখন বুঝে নেবেন, সে আপনাকে তার পৃথিবীর একমাত্র নারী হিসেবে শিকার করতে চায়। আর যখন সে আপনার জন্য, আপনার পরিবারের জন্য নিজের শরীরকে শাসন করে, শত কষ্ট সহ্য করে দূরে থাকে, তখন তার সেই ত্যাগকে সম্মান করুন।

পুরুষের শরীর হয়তো একটা আগ্নেয়গিরি, কিন্তু তার মনটা হলো সেই পর্বতের চূড়ায় থাকা বরফ। ভালোবাসা আর সম্মান পেলে সেই বরফ গলে শান্তির নদী হয়ে আপনার জীবনকে শান্তিতে ভরিয়ে দিতে পারে। আর অবহেলা আর অসম্মান পেলে সেই আগ্নেয়গিরি এমনভাবে ফেটে যেতে পারে, যা আপনার সাজানো সংসারকে ছারখার করে দেবে।

প্রশ্নটা আপনার কাছেই। আপনি কি তার শরীরের আগুনের কাছে হার মানবেন, নাকি তার ত্যাগের গভীরতাকে সম্মান করতে শিখবেন? পুরুষ কি কেবলই এক ক্ষুধার্ত পশু, নাকি আপনার জন্য সবকিছু বাজি রাখা এক যোদ্ধা? আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আজ নিজেকেই প্রশ্নটা করুন। সিদ্ধান্ত আপনার।

Hello world!

13 January 2025, 67666 বার পড়া হয়েছে,