রাশিয়ার বহরে আবারও পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র, স্নায়ুযুদ্ধের কোন পরিকল্পনা?

আন্তর্জাতিক, 23 May 2025, 25 বার পড়া হয়েছে,

 

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত : ২৩ মে ২০২৫ , ২২:০২

 

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী, একটি দেশ যখন সামরিক বা পরমাণু শক্তি অর্জনে অগ্রসর হয়, তখন তা অন্য দেশের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এমন পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট দেশটি হয় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, নয়তো কৌশলগত সখ্যতা গড়ে তোলে।

যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরেই পরস্পরের প্রতিপক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বী। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সখ্য বজায় রাখার পক্ষপাতী ছিলেন, তবুও তিনি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কৌশলগত চাপ বজায় রেখেছেন। সামগ্রিকভাবে, দুই দেশই একে অপরের সামরিক শক্তি নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

 

সম্প্রতি মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা (DIA) এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে, রাশিয়া তার সামরিক বহরে আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্রের পুনরায় সংযুক্তি শুরু করেছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সোভিয়েত ইউনিয়নের আমলে ব্যবহৃত হতো এবং বর্তমানে মিগ ও সুখই ধরনের রুশ যুদ্ধবিমানে সংযুক্ত করা হয়েছে।

সংবাদমাধ্যম নিউজউইক জানিয়েছে, এই বিষয়ে রুশ প্রশাসন (ক্রেমলিন)-এর মতামত জানার জন্য তারা যোগাযোগ করেছে। DIA–র এই দাবি গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে পশ্চিমা বিশ্ব ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক ব্যাপকভাবে খারাপ হয়েছে, যা এমনকি স্নায়ু যুদ্ধকালেও দেখা যায়নি।

সমরবিষয়ক অনলাইন ম্যাগাজিন ওয়ার জোন জানিয়েছে, এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র সম্পর্কে বর্তমানে খুবই সীমিত তথ্য পাওয়া যায়। মার্কিন পরমাণু তথ্য প্রকল্পের পরিচালক হ্যান্স ক্রিস্টেন্সেন বলেন, তিনি বহু বছর ধরে শুনে আসছেন যে রাশিয়া তার যুদ্ধবিমানে আকাশ থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র সংযুক্ত করছে।

 

চলতি বছরের ১১ মে DIA তাদের বৈশ্বিক হুমকি মূল্যায়ন প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, রাশিয়া নানা কৌশলে তার পরমাণু অস্ত্রভান্ডার আধুনিকায়ন করছে। এর মধ্যে নতুন আকাশ থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র এবং “নোবেল নিউক্লিয়ার সিস্টেম” অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

ওয়ার জোন আরও জানায়, স্নায়ু যুদ্ধের সময় এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র বোমারু বিমান ধ্বংসের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতো। যদিও বর্তমানে সেই প্রেক্ষাপট বদলেছে, তবুও এটি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় একটি কার্যকর নিবারণক্ষম অস্ত্র হতে পারে। স্টেলথ প্রযুক্তির যুদ্ধবিমান থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করা সম্ভব হলেও, রাডারযুক্ত হওয়ায় এর আঘাত এড়ানো কঠিন।

এই ক্ষেপণাস্ত্র ড্রোন ও প্রচলিত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রও ধ্বংস করতে সক্ষম, যা রাশিয়ার প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

DIA দাবি করেছে, রাশিয়ার পরমাণু অস্ত্রভান্ডারে বর্তমানে প্রায় ১,৫৫০টি কৌশলগত ওয়ারহেড এবং ২,০০০ অকৌশলগত ওয়ারহেড রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, রাশিয়া তাদের প্রতিবেশী বেলারুশকেও পরমাণু শক্তিতে বলীয়ান করার উদ্যোগ নিয়েছে। বেলারুশে পরমাণু কেন্দ্র স্থাপন, পরিচালনা এবং জনবলকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে দেশটিকে পরমাণু সক্ষম করে তোলার কাজ চলছে বলে দাবি করা হয়েছে।

 

Hello world!

13 January 2025, 18682 বার পড়া হয়েছে,