অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত : ২২ মে ২০২৫ , ১২:০০
বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে এখনো পারিবারিক বন্ধন ও নৈতিক দায়িত্ববোধ গুরুত্বপূর্ণ হলেও, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়—বয়সের ভারে ন্যুব্জ বাবা-মা তাদের সন্তানের অবহেলায় দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন। অথচ, বাংলাদেশের বিদ্যমান আইনে বাবা-মার ভরণপোষণ ও সেবা-শুশ্রূষার দায়িত্ব সন্তানদের ওপর আইনগতভাবে আরোপ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে আইনজীবী ব্যারিস্টার লিমা আঞ্জুমান বলেন, “যদি কোনো সন্তান তার বাবা-মার দায়িত্ব পালন না করে, তাহলে মা-বাবা কোর্টে গিয়ে সন্তানের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন। আইন অনুযায়ী, সন্তান বাধ্য—তাকে তার বাবা-মার ভরণপোষণ নিশ্চিত করতে হবে এবং বৃদ্ধ বয়সে তাদের দেখাশোনা করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “কোর্ট এ বিষয়ে নিশ্চিত রিলিফ দেয় এবং কোনো বাবা-মা তাদের সন্তানের কাছ থেকে ন্যায্য অধিকার আদায়ে আদালতের সহায়তা চাইলে, আইন তাঁদের পক্ষে থাকবে।”
আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার উপায়
যদি কোনো বাবা-মা সামাজিক বা পারিবারিকভাবে সন্তানের অবহেলা মোকাবিলা করতে না পারেন, তাহলে তারা পারিবারিক আদালতে গিয়ে ‘ভরণপোষণ মামলা’ দায়ের করতে পারেন। এই আইনের আওতায় কোর্ট সন্তানের ওপর নির্দিষ্ট ভরণপোষণ নির্ধারণ করে আদেশ দিতে পারে।
সামাজিক মূল্যবোধের চর্চার গুরুত্ব
যদিও আইনি পথ রয়েছে, তবে ব্যারিস্টার লিমা আঞ্জুমান মনে করেন, বিষয়টি কোর্টে না গিয়ে পারিবারিকভাবে সমাধান হওয়াই শ্রেয়। কারণ, মা-বাবার পক্ষে সন্তানের বিরুদ্ধে মামলা করা খুবই যন্ত্রণাদায়ক এবং সামাজিকভাবে লজ্জার বিষয়। তাই আমাদের সমাজে নৈতিকতা, পারিবারিক বন্ধন এবং দায়িত্ববোধের চর্চা জরুরি।
বাবা-মার দেখাশোনা ও ভরণপোষণ শুধু আইনি বাধ্যবাধকতাই নয়, এটি মানবিক ও নৈতিক দায়িত্বও বটে। তবে সব উপায় শেষ হলে, কোর্টে যাওয়ার অধিকার বাবা-মার রয়েছে এবং সেখানে তাঁরা ন্যায়বিচার পাবেন—এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।