ক্রইম সন্ধান ডেস্ক
প্রকাশিত : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ০৬:১৪
জামালপুরের মাদারগঞ্জে মাদ্রাসায় না এসেও হাজিরা খাতায় সই দিয়ে নিয়মিত বেতন তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলার কড়ইচড়া ইউনিয়নের মিলনবাজার ভাংবাড়ি আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।
তিনি ছিলেন উপজেলা জামায়াতের আমীর। যদিও নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের কারণে দল তাকে বহিষ্কার করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. ফরহাদ হোসেন।কিন্তু পলাতক থেকেও তিনি হাজিরা খাতায় সাক্ষর দিয়ে বেতন-ভাতা তুলে নিচ্ছেন। সাথে মাদ্রাসার হাজিরা খাতায় অধ্যক্ষের উপস্থিতির স্বাক্ষর দেখা যায়।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক মাদ্রাসার একাধিক শিক্ষক জানান, জানুয়ারি মাস থেকে অধ্যক্ষ আব্দুল ওয়াহেদ মাদ্রাসায় আসেন না। এরপরেও তিনি কীভাবে বেতন নিচ্ছেন। নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মো. রহমতুল্লাহ, আশিনুর, মিলন হাসানসহ কয়েক শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের অধ্যক্ষ ৫-৬ মাস ধরে মাদ্রাসায় আসেন না। স্থানীয় বাসিন্দা আবু বক্বর সিদ্দিক বলেন, মাদ্রাসায় না এসেও কীভাবে তিনি বেতন উত্তোলন করেন? কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি, বিষয়টি যেন তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
মাদ্রাসাটির উপাধ্যক্ষ মাওলানা মামুনুর রশীদ বলেন, অধ্যক্ষ মহোদয় মাদ্রাসা না এসেও বেতন তোলেন বিষয়টি তার জানা নেই। তবে তিনি (অধ্যক্ষ) এডহক কমিটির সভাপতির কাছ থেকে ৩ মাসের ছুটি নিয়েছেন। ৩ মাসের ছুটি নিয়ে ৬ মাস ধরে না আসার বিষয়টি জানতে চাইলে কোন সদুত্তর দিতে পারেনি তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অধ্যক্ষ আব্দুল ওয়াহেদের একসময় করছেন জামায়াতের সক্রিয় রাজনীতি। জামায়াত থেকে বহিষ্কার হওয়ার পর অধ্যক্ষ আব্দুল ওয়াহেদ তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টে আওয়ামী লীগের সরকারের পতনের পর মাদ্রাসার ৩ কর্মচারীর বেতন আটকে দেন। এ নিয়ে জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশ হয়। প্রতিষ্ঠানটির অধিকাংশ শিক্ষক কর্মচারী তার কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হলেও প্রকাশ্যে মুখ খোলেন না কেউ।
অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ আব্দুল ওয়াহেদের ব্যবহৃত মুঠোফোনে ফোন করা হলে নম্বরটি বন্ধ দেখায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাদির শাহ বলেন, মাদ্রাসায় না এসে হাজিরা খাতায় সই করে বেতন উত্তোলনের সুযোগ নেই। দ্রুত বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।