বিজয়নগর প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের হরষপুর গ্রামের কবিরাজ শাহ জামাল। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত নিজ বাড়িতেই চেম্বার করেন তিনি। হাড় ভাঙ্গা, হাড় ক্ষয়, হাড় বড় হওয়া, বাত ব্যাথা রোগের সমস্যা এবং নাকের পলিপাসের মত জটিল রোগের চিকিৎসা দেন তিনি। নিজেই যেখানে চিকিৎসার নামে প্রতারণা করে সাধারণ মানুষের কাছে থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন সেখানে তার ভিজিটিং কার্ডে লিখে রেখেছেন ‘প্রতারক হতে সাবধান’। এ যেন চুরের মার বড় গলা।
সম্প্রতি জেলার আখাউড়া উপজেলার কল্যাণপুর গ্রামের প্রবাসী আব্দুল হান্নানের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে ফাহিম (৩১) অটোরিকশায় সড়ক দুর্ঘটনায় বাম হাত ভেঙে ফেলে। লোকজনের কাছে কবিরাজ শাহ জামালের সন্ধান পেয়ে তার মা তাকে কবিরাজের কাছে নিয়ে যায়। কবিরাজ ১৮ হাজার টাকা চুক্তিতে শুরু করেন চিকিৎসা। কবিরাজের অপচিকিৎসায় কারণে রোগীর হাত পঁচে ঘা হয়ে অবস্থার গুরুতর অবনতি হয়ে চিরতরে পঙ্গু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। এবিষয়ে প্রতিকার চেয়ে বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করেন ফাহিমের মা মোছাঃ নাজমা বেগম।
অভিযুক্ত কবিরাজ শাহ জালাল বলেন, ‘বাপ-দাদার কাছ থেকে কবিরাজি শিখেছি। আমরা সম্পূর্ণ অর্গানিক উপায়ে গাছ-গাছালি দিয়ে চিকিৎসা দিয়ে থাকি। প্রতিদিন, ৪০-৫০ জন রোগী আসে। প্রতি রোগী থেকে মাসে ৪-৫ হাজার টাকা নিয়ে থাকি। কোনো চিকিৎসা সনদ না থাকলেও অভিজ্ঞতা থেকে এক্স-রে রিপোর্ট দেখে চিকিৎসা দেন তিনি। ফাহিমের অবস্থা অবনতি হলে তিনিই তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে বলেন।
বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুমন ভূইয়া এনটিভি অনলাইনকে বলেন, আমরা মোছাঃ নাজমা বেগমের ছেলে মোঃ ফাহিম কবিরাজ কর্তৃক একটি ভুল চিকিৎসার অভিযোগ পেয়েছি। এব্যাপারে আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিব। আমরা বলতে চাই এই ধরনের কবিরাজি চিকিৎসায় কেউ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। সবাই যেন সচেতন থাকে। এব্যাপারে আমরা আরো বেশি সচেতন হব।