অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত : ০১ জুন ২০২৫ , ১৯:৪৭
সরকার সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা জারি করেছে উত্তরাধিকার সম্পত্তি নিয়ে, যা ২০০৪ সালের জমি ব্যবস্থাপনা আইনের বাস্তবায়নকে আরও কঠোর করেছে। এখন থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত জমি এককভাবে কেউ আর নিজের নামে খারিজ, নামজারি বা খাজনা প্রদান করতে পারবেন না — যদি না রেজিস্ট্রিকৃত বণ্টননামা দলিল থাকে।
আগে সাধারণত পরিবারের মধ্যে মৌখিকভাবে বা অমীমাংসিতভাবে জমির অংশ ভাগ করে নেওয়া হতো। কিন্তু এই প্রথা নানা পারিবারিক বিরোধ ও জটিলতার জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে যখন একজন কোনো গুরুত্বপূর্ণ বা লাভজনক অংশ দখল করে ফেলে, অন্য উত্তরাধিকারীদের অনুমতি ছাড়াই।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী এখন থেকে কেউ যদি নিজের নামে জমি আলাদা করতে চান, ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) দিতে চান, অথবা বিক্রি করতে চান — তাহলে তাকে অবশ্যই অন্য সকল ওয়ারিসদের সম্মতি নিয়ে রেজিস্ট্রিকৃত বণ্টননামা দলিল করতে হবে।
কেন এই পরিবর্তন?
২০০৪ সালেই এই আইন জারি হয়েছিল, তবে এতদিন তা কার্যত প্রয়োগ করা হচ্ছিল না। মানুষজন বণ্টননামা ছাড়াই খাজনা দিতেন, জমি ব্যবহার করতেন, এমনকি বিক্রি করতেন। এই অবস্থার অবসান ঘটাতে ২০২৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সরকার নতুন করে একটি পরিপত্র জারি করে নির্দেশনা দিয়েছে — এখন থেকে বণ্টননামা দলিল ছাড়া কোনো উত্তরাধিকারী তার অংশের জমি আলাদাভাবে ব্যবহারের সুযোগ পাবেন না।
কি আছে ইসলামী ও হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে?
ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী (সূরা নিসা অনুসারে):
হিন্দু উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী মৃতক্ষর বা দায়ভাগ ভিত্তিতে বণ্টন হয়, যেখানে পুত্র ও কন্যা উভয়ের সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে সাম্প্রতিক আইনি সংস্কার অনুযায়ী (ভারতে প্রযোজ্য)।
তবে ধর্মীয় আইন অনুযায়ী ‘হিস্যা’ (অংশ) ঠিক থাকলেও, কোন জমির কোন অংশটি কে ভোগ করবেন, সেটি নির্ধারণ করতে এখন বাধ্যতামূলকভাবে রেজিস্ট্রিকৃত বণ্টননামা দলিল প্রয়োজন।
মূল পয়েন্টগুলো:
উত্তরাধিকার আইনে ধর্মীয় হিস্যা পরিবর্তন হয়নি, তবে তার বাস্তবায়নের পদ্ধতিতে এসেছে বড় পরিবর্তন। এখন পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে বসে রেজিস্ট্রিকৃত বণ্টননামা করতে হবে। এটি পরিবারে শান্তি রক্ষা করবে, জমি নিয়ে বিভ্রান্তি ও বিরোধ কমাবে।