অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত : ২৫ মে ২০২৫ , ১৭:৫৪
আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব থাইরয়েড দিবস। অথচ অনেকেই জানেন না, দেহের একটি ছোট্ট গ্রন্থি—থাইরয়েড—বিপুল প্রভাব ফেলে আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে। রাজধানীতে রোববার অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে উঠে এসেছে উদ্বেগজনক তথ্য—বাংলাদেশে প্রায় চার কোটি মানুষ থাইরয়েড সমস্যায় ভুগছেন, যা দেশের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশেরও বেশি। এর মধ্যেও ৬০ শতাংশ মানুষ জানেনই না যে তারা এই সমস্যায় আক্রান্ত।
২০০৯ সাল থেকে প্রতিবছর ২৫ মে বিশ্বজুড়ে থাইরয়েড নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে পালন করা হচ্ছে এই দিবস। দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে দেশের খ্যাতনামা চিকিৎসকদের নিয়ে আয়োজন করা হয় একটি সেমিনার। সেখানে বিশেষজ্ঞরা জানান, ডায়াবেটিসের মতোই থাইরয়েড ডিজঅর্ডার এখন বাংলাদেশের জন্য এক বড় স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতি বছর নতুন করে ৩৫ থেকে ৪০ লাখ মানুষ থাইরয়েড সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে এর বেশিরভাগই অজানা রয়ে যাচ্ছে, কারণ অনেক ক্ষেত্রেই শুরুতে রোগের কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। ফলে অনেকেই বুঝে উঠতে পারেন না যে তারা চিকিৎসার প্রয়োজন অনুভব করছেন।
চিকিৎসকরা বলছেন, থাইরয়েড হরমোন দেহের শক্তি উৎপাদন, মানসিক বিকাশ, হৃদযন্ত্রের কার্যক্রমসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়ায় ভূমিকা রাখে। হরমোনের ঘাটতি হলে দেখা দিতে পারে বন্ধ্যত্ব, শিশুদের মেধা ও শারীরিক বিকাশে বাধা, এমনকি গুরুতর জটিলতা। একবার এই ঘাটতি ধরা পড়লে আজীবন হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি প্রয়োজন হতে পারে।
একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, “অনেক শিশু সময়মতো যদি চিকিৎসা না পায়, তবে তাদের মেধা আর ঠিকভাবে বিকশিত হয় না। আবার অনেক নারী সন্তান নিতে না পারার পর চিকিৎসা শুরু করলেও তখন অনেক দেরি হয়ে যায়।”
আলোচনায় আরও জানানো হয়, বর্তমানে দেশে বারডেম হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ প্রায় প্রতিটি সরকারি মেডিকেল কলেজে থাইরয়েড সমস্যার চিকিৎসা ও পরামর্শ পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া পরমাণু চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতেও আধুনিক থাইরয়েড চিকিৎসা সেবা চালু রয়েছে।
থাইরয়েড সমস্যা নিয়ে সচেতনতা গড়ে তোলাই এখন সবচেয়ে জরুরি, যেন মানুষ অজান্তেই এই হরমোনজনিত জটিলতায় না ভোগেন। থাইরয়েড সমস্যাকে হালকাভাবে নিলে তা হতে পারে জীবনের জন্য বিপজ্জনক।