হঠাৎ নোবেলজয়ী মালালার স্মৃতি ফিরে এলো ‘গাঁজা সেবনের পর’

আন্তর্জাতিক, 14 October 2025, 48 বার পড়া হয়েছে,

ক্রইম সন্ধান ডেস্ক

নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী মালালা ইউসুফজাই এবার প্রকাশ্যে জানালেন তার গভীর মানসিক সংগ্রামের কথা। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্ধুদের সঙ্গে গাঁজা সেবনের এক রাতে হঠাৎ করেই তার মনে ফিরে আসে ১৩ বছর আগের সেই দুঃস্বপ্নময় স্মৃতি। যে রাতে তালেবান বন্দুকধারীর গুলিতে তিনি মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসেন।

নিজের নতুন আত্মজীবনী ‘ফাইন্ডিং মাই ওয়ে’ প্রকাশের আগে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মালালা বলেন, “আমার মস্তিষ্ক পুরো ঘটনাটা ভুলে গিয়েছিল। কিন্তু সেই রাতে গাঁজা খাওয়ার পর হঠাৎ সব কিছু মনে পড়ে গেল। আমি যেন আবারও সেই মুহূর্তে ফিরে গিয়েছিলাম।”

২০১২ সালে মেয়েদের শিক্ষার পক্ষে কথা বলার অপরাধে পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকায় স্কুলবাসে থাকা অবস্থায় এক মুখোশধারী তালেবান বন্দুকধারী মালালার মাথায় গুলি করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে যুক্তরাজ্যে পাঠানো হয় চিকিৎসার জন্য।

মালালা বলেন, “সেই রাতে মনে হচ্ছিল আমি আবারও গুলির শিকার হচ্ছি। সবকিছু এত বাস্তব মনে হচ্ছিল যে মনে হলো আমি মারা গিয়েছি, যেন পরজগতে আছি।”

গাঁজা সেবনের পর ঘরে ফেরার পথে তিনি জ্ঞান হারান। বন্ধুরা তাকে কোলে করে নিয়ে যায়। তখন তার মনে ভেসে ওঠে বাসে রক্তাক্ত মুহূর্তগুলোর দৃশ্য ‘মানুষ, গুলি, রক্ত, আতঙ্ক’।

তিনি জানান, “কোনো জায়গা ছিল না পালানোর, এমনকি নিজের মন থেকেও না।”

এরপর থেকেই আতঙ্ক, ঘুমহীনতা ও উদ্বেগে ভুগতে থাকেন মালালা। ঘাম, কাঁপুনি, ও দ্রুত হৃদস্পন্দনের মতো উপসর্গ দেখা দেয়।

চিকিৎসকরা জানান, এই মানসিক বিপর্যয়ের মূল কারণ হলো শৈশবে তালেবান শাসনে পাওয়া ভয়, গুলিবিদ্ধ হওয়ার ট্রমা, এবং পড়াশোনার চাপ।

থেরাপিস্টের সহায়তায় মালালা ধীরে ধীরে তার ভয় ও স্মৃতির মুখোমুখি হতে শুরু করেন। তিনি বলেন, “আমি ভেবেছিলাম, আমি তো বেঁচে আছি, কিছুই আমাকে ভয় দেখাতে পারবে না। কিন্তু আসলে সাহস মানে কেবল বাইরের বিপদকে জয় করা নয়, নিজের ভেতরের ভয়কেও জেতা।”

মালালা জানেন, গাঁজা সেবনের অভিজ্ঞতা প্রকাশ্যে আনা বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে, কিন্তু তিনি তাতে কর্ণপাত করবেন না। তার নতুন বই ‘ফাইন্ডিং মাই ওয়ে’-তেই পাঠকরা সব প্রশ্নের উত্তর পাবেন বলে জানান তিনি।

‘আই অ্যাম মালালা’ বইয়ের পর এটি তার দ্বিতীয় আত্মজীবনী, যেখানে তিনি তুলে ধরেছেন প্রাপ্তবয়স্ক জীবনের অভিজ্ঞতা, মানসিক লড়াই, ও ব্যক্তিগত জীবন। বইটিতে রয়েছে স্বামী পাকিস্তানের ক্রিকেট ম্যানেজার আসার মালিকের সঙ্গে তার সম্পর্ক ও তাদের নতুন প্রকল্প ‘রিসেস’-এর কথা। যেখানে নারীদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

Hello world!

13 January 2025, 66159 বার পড়া হয়েছে,