এই ৮টি ভুল আপনাকে দ্রুত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে

স্বাস্থ্য, 15 June 2025, 35 বার পড়া হয়েছে,

ক্রইম সন্ধান ডেস্ক

প্রকাশিত : ১৫ জুন ২০২৫ , ১৬:৪৬

 

উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন বর্তমান সময়ের অন্যতম সাধারণ, তবে নীরব ঘাতক রোগগুলোর একটি। প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন। বেশিরভাগ সময় এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলো অবহেলা করা হয়।

বছরের পর বছর গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে—আপনার দৈনন্দিন জীবনযাপন এবং জীবনের সিদ্ধান্তগুলোর প্রভাব পড়ে আপনার ভবিষ্যতের স্বাস্থ্যের ওপর। সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আমাদের প্রতিদিনের অভ্যাস ও পছন্দগুলো যদি সঠিক না হয়, তবে তা উচ্চ রক্তচাপসহ নানা জটিলতার কারণ হতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) ২০২২ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধু ভারতে ১৮৮ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিও বাড়ে। তবে এটি প্রতিরোধযোগ্য একটি রোগ, যদি সময় থাকতে অভ্যাসগুলো পাল্টানো যায়।

WebMD-এর সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা গেছে, কিছু সাধারণ দৈনন্দিন অভ্যাস আমাদের রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে। তবে সুখবর হলো, জীবনযাপনের ধরনে পরিবর্তন আনলে এই ঝুঁকি কমানো সম্ভব।

চলুন জেনে নিই, এমন ৮টি সাধারণ অভ্যাস কী কী, যেগুলো নীরবে আপনার রক্তচাপ বাড়িয়ে তুলছে:

 

১.চিনি গ্রহণ
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত চিনি গ্রহণ সিস্টোলিক রক্তচাপ ১৫ এবং ডায়াস্টোলিক চাপ ৯ পয়েন্ট পর্যন্ত বাড়াতে পারে। কোমল পানীয় ও প্রক্রিয়াজাত মিষ্টি খাবারে সাধারণত এই চিনি বেশি পরিমাণে থাকে।

২. স্লিপ অ্যাপনিয়া বা ঘুমে দমবন্ধ হওয়া
স্লিপ অ্যাপনিয়া রাতে ঘুমের সময় দেহে অক্সিজেনের মাত্রা কমিয়ে দেয় এবং স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ ঘটায়, যা হৃৎপিণ্ডে চাপ তৈরি করে। এই সমস্যা রোধে ওজন কমানো, অ্যালকোহল ও ঘুমের আগে ট্রাঙ্কুইলাইজার এড়ানো উচিত।

৩. অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট গ্রহণ

মনের অসুখ বা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ব্যবহৃত অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট ওষুধগুলো রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে, যদি সঠিকভাবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া গ্রহণ করা হয়। বিশেষ করে ভেনলাফ্যাক্সিন বা MAOIs-এর মতো ওষুধ মিশিয়ে খেলে সমস্যা গুরুতর হতে পারে।

৪. অতিরিক্ত কথা বলা বা আবেগপ্রবণ আলোচনা
ব্যক্তিগত আবেগ প্রকাশ করার সময়, বিশেষত কোনো স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে কথা বললে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। তাই আবেগ নিয়ন্ত্রণের জন্য ধ্যান বা যোগব্যায়াম অভ্যাস করতে পারেন।

৫.পর্যাপ্ত পানি না খাওয়া
ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা শরীরের রক্তনালিকে সংকুচিত করে এবং হৃৎপিণ্ডের ওপর চাপ তৈরি করে, যা রক্তচাপ বাড়ায়। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা তাই অত্যন্ত জরুরি।

৬. ডিকনজেস্টেন্ট ওষুধ
সর্দি বা নাক বন্ধের জন্য ব্যবহৃত কিছু ডিকনজেস্টেন্ট ওষুধ রক্তনালি সংকুচিত করে হৃৎপিণ্ডে চাপ বাড়াতে পারে। এ ধরনের ওষুধ সতর্কভাবে ব্যবহার করতে হবে।

৭. পটাশিয়ামের অভাব
শরীরে পটাশিয়ামের ঘাটতি হলে তা সোডিয়ামের ভারসাম্য বিঘ্নিত করে এবং কিডনিতে তরল জমে যায়, ফলে রক্তচাপ বাড়ে। খাদ্যতালিকায় পালং শাক ও সবুজ মটরশুটি রাখলে এই ঘাটতি পূরণ হতে পারে।

৮.আকস্মিক তীব্র ব্যথা
বরফে হাত ডোবানো বা গরম কিছু ছোঁয়ার মতো তীব্র ব্যথা হঠাৎ রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে। যদিও এই চাপ স্বল্প সময়ের জন্য থাকে, তবুও সতর্ক থাকা জরুরি।

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, অনিয়মিত জীবনযাপনই উচ্চ রক্তচাপসহ বহু রোগের মূল কারণ। এখন সময় সচেতন হওয়ার। প্রতিদিনের ছোট ছোট সিদ্ধান্তই আমাদের দীর্ঘমেয়াদি সুস্থতার চাবিকাঠি। সুতরাং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলুন, সুস্থ জীবন বেছে নিন।

Hello world!

13 January 2025, 27158 বার পড়া হয়েছে,